March 22, 2025 | Saturday | 11:33 PM

বামাখ্যাপা: এক অঘোরী সাধকের রহস্যময় জীবনকাহিনী

0

তারাপীঠ, বীরভূম: অঘোর সাধক বামাখ্যাপা, যাঁর জীবনকাহিনী রহস্য ও কিংবদন্তিতে ভরা। তন্ত্রমন্ত্র ও অলৌকিক ক্ষমতার জন্য বিখ্যাত, বামাখ্যাপা আজও এক জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পূজিত।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন:

বামাখ্যাপার জন্ম ১৮৩০ সালে, বীরভূম জেলার বানকুড়া গ্রামে। জন্মনাম ছিলো বামাচরণ। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন একটু অন্যরকম। ধ্যান-যোগ ও তন্ত্রমন্ত্রের প্রতি ছিলো তার আকর্ষণ। কিশোর বয়সে তিনি তারাপীঠে চলে যান এবং সেখানেই সাধনার জীবন শুরু করেন।

কঠোর সাধনা ও অলৌকিক ক্ষমতা:

বামাখ্যাপা দীর্ঘদিন ধরে কঠোর সাধনা করেন। শ্মশানে অবস্থান করে তিনি তন্ত্রমন্ত্র ও যোগব্যায়ামে নিজেকে নিবেদিত করেন। তাঁর সাধনার ফলে অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করেন বলে জনশ্রুতি। বলা হয়, তিনি মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করতে পারতেন, ভবিষ্যৎ ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারতেন এবং অসাধ্য রোগ নিরাময় করতে পারতেন।

বিদ্রোহী চরিত্র ও বিতর্ক:

বামাখ্যাপা ছিলেন সমাজের রীতিনীতি ও প্রথাগত ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধী। তিনি নিজের পথ তৈরি করেছিলেন এবং তন্ত্রমন্ত্রের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের উপর জোর দিয়েছিলেন। তার এই বিদ্রোহী চরিত্রের জন্য তিনি সমাজের একাংশের কাছে সমালোচিত হয়েছিলেন।

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার:

১৯১০ সালে, মাত্র ৮০ বছর বয়সে বামাখ্যাপা মারা যান। তাঁর মৃত্যু আজও রহস্যে ঘেরা। তাঁর সমাধি আজও তারাপীঠে অবস্থিত এবং তীর্থযাত্রীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

বামাখ্যাপা ছিলেন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, তবে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান আজও মানুষের কাছে অবিস্মরণীয়। তিনি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *