February 10, 2025 | Monday | 7:21 PM

“যাবজ্জীবন হল নিয়ম, আর মৃত্যুদণ্ড ব্যতিক্রম” – বিচারপতি অনির্বান দাস

0

একথা ঠিক যে বিশ্বের বহু দেশ থেকে মৃত্যুদন্ড উঠে গেছে। তার কারণ, খুনের বদলে খুন – এটা কোনো সভ্য দেশের নিয়ম হতে পারে না। যদিও এটাও ঠিক যে যখন পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌছায় যে মনে করা হয় সেই অপরাধী আর নিজেকে সংশোধন করবে না, তখন ব্যতিক্রম হিসাবে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। অন্তত বিচারপতি অনির্বান দাস তা মনে করেন। সঞ্জয় রায়ের সাজা দেবার বিষয়ে ১৭২ পৃষ্ঠার রায়ে তিনি নানা প্রসঙ্গ এনেছেন। এনেছেন হসপিটালের নিরাপত্তার ঘাটতির কথা, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কথা। তারপরেই সেই সুদীর্ঘ রিপোর্টে তিনি লেখেন,”একটা ঘটনা যে সভ্য সমাজে দাঁতের বদলে দাঁত, নখের বদলে নখ, মৃত্যুর বদলে মৃত্যু নিয়ম নয়। কিন্তু, এটাও সমান সত্য যে যখন কোনও মানুষ জন্তু হয়ে যায়, সমাজের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তখন আইন বলছে সে জীবন থেকে বঞ্চিত হতে পারে।” এছাড়াও তিনি লেখেন বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে এখনো অজানা অনেক তথ্য আছে।

  মূল প্রশ্ন ছিল, কোনো খুনের পিছনে তার মোটিভ। তিলোত্তমা ও সঞ্জয়ের মধ্যে আগে থেকে কোনও যোগসূত্র ছিল না। খুনের উদ্দেশ্যে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার যে হাসপাতালে ঢোকেননি, সেকথা উল্লেখ করেছেন। রায়ে বিচারক লিখেছেন, অভিযুক্ত জানিয়েছেন যে মদ্যপ অবস্থায় ওইদিন আরজি করের চারতলায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি যে সেমিনার হলে যাননি, তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। অন্যদিকে, তদন্তকারীদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে একটাই বিকল্প যে, ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। এবং আকস্মিক লালসা থেকে নির্যাতিতাকে আক্রমণ করেন। তবে এটা পূর্বপরিকল্পিত অপরাধ নয়। নির্যাতিতা যে ওই রুমে রয়েছেন, তা জানতেন না অভিযুক্ত। প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষার ব্যর্থতার কথাও রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। শেষে লেখে, “যাবজ্জীবন হল নিয়ম, আর মৃত্যুদণ্ড ব্যতিক্রম।”

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *