খড়দহের রাসযাত্রা উৎসব
TODAYS বাংলা: খড়দহের রাসযাত্রা উৎসব আজও তার গৌরব নিয়ে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। এই উৎসব শুধুমাত্র বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের নয়, সমস্ত হিন্দু, জাত পাত বর্ণভেদে,সবাই সামিল হন এই উৎসবে। নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর সময় থেকেই খড়দহ একটি সুপ্রাচীন বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র।

খড়দহের প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই রাস উৎসব শুরু হয় গোপাষ্টমীর দিন থেকে। এইদিন সন্ধ্যে ৭টায় শ্যামকে চতুর্দোলায় করে নিয়ে যাওয়া হয় পুরোনো বাজারের রাস মঞ্চে। এরপর আরেকটি চতুর্দোলায় নিয়ে যাওয়া হয় রাধারানীকে। এখানেই গোপিনীদের সাথে শ্যামের রাসযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

খড়দহের সবচেয়ে বড়ো উৎসব এই রাস মেলার সূচনা হয় একটি ফানুস উড়িয়ে। রাস পূর্ণিমার দিন থেকে প্রতিদিন রাতে শ্যাম থাকেন রাসমঞ্চে। পরদিন প্রভাতে তাকে আবারও শ্যামের মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়। চার দিনের এই উৎসবের প্রথম দিন শ্যামকে নটোবর বেশে এবং দ্বিতীয় দিন রাজ বেশে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের শ্যামকে সাজানো হয় রাখাল বেশে। করোনা আবহে ২ বছর এই উৎসব বন্ধ থাকার পর এই বছরের রাসমেলা অত্যন্ত জমজমাটপূর্ণ। মাননীয় পশ্চিমবঙ্গের কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন এই উৎসবে। কিছু অনিয়মের কারণে শ্যামের মন্দিরের পুরনো ট্রাস্টকে ভাঙে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার এই উৎসবের শেষ দিন। ১৭ চূড়া বিশিষ্ট রাস মন্দির থেকে নিজের মন্দিরে শ্যামকে আনা হলে আয়োজন করা হয় এক বিরাট ভোগের। এই ভোগকে বলা হয় ‘দৃষ্টিভোগ’। এই দৃষ্টিভোগের প্রসাদ, উৎসব এই রীতি অনুযায়ী লুঠ করা হয়। এই প্রসাদ লুঠ এই রাস উৎসবের একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্গ। রাস মন্দিরে বিভিন্ন এলাকার কীর্তনীয়া সম্প্রদায়রা একত্রিত হয়ে শ্যামকে কীর্ত্তন শোনান। খড়দহের পুলিশ সুত্রে জানা যায় আজ এই শ্যামের মন্দিরে প্রায় ৭০,০০০ মানুষের সমাগম হয়েছে।তব প্রশাসন অত্যন্ত তৎপর ছিলেন, ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। কোথাও কোন অপ্রিতিকর খবর পাওয়া যায়নি।
শ্যামের মন্দির থেকে।
সুরথ চক্রবর্ত্তী।