April 19, 2025 | Saturday | 3:18 PM

দুঘন্টার মধ্যেই পাকড়াও দোষীকে! এও কী সম্ভব

0

TODAYS বাংলা : ফের কলকাতা পুলিশের কর্মদক্ষতার পরিচয়। দুঘন্টার মধ্যেই পাকড়াও দোষী। ঘটনাটি ঘটে ২৯ মার্চ রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ। ঘটনাটি ঘটার পরেরদিনই সকালে, তিনজন উপস্থিত হন রবীন্দ্র সরোবর থানায়, দেখা করেন ডিউটি অফিসার, সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জীব কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে। ঘটনার প্রমাণ বলতে তড়িঘড়ি তোলা ট্যাক্সির নম্বর প্লেটের ঝাপসা একটি ছবি।

কুছ পরোয়া নেই, সেই ঝাপসা ছবির ভিত্তিতেই থানার ওসি ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ কর্মকারের তত্ত্বাবধানে ট্যাক্সির খোঁজ শুরু হয়। এবং গাড়ির মালিকের খোঁজ পেয়ে যান দু’ঘন্টারও কম সময়ে। মালিকের মাধ্যমে চালককে ধরা হলে সে প্রথমে ঘটনার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে শুধু নয়, উল্টে দায় চাপানোর চেষ্টা করে ওই ছাত্রের উপর। তবে তার সেই চেষ্টা বেশিক্ষণ টেকেনি, চাপের মুখে ভেঙে পড়ে তাকে অবশেষে সত্যি কথাটা বলতে হয়। ফিরিয়ে দিতে হয় ‘বাড়তি’ টাকাও।

আসলে ঘটনাটি কী ঘটেছিল সেইদিন জেনে নেওয়া যাক। মাদ্রাজ-হাওড়া মেল থেকে হাওড়া স্টেশনে আসে একটি প্রখ্যাত কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র, আদতে কেরালার বাসিন্দা সে। এতদিন অনলাইনে ক্লাস করছিল, এবার অফলাইন ক্লাস করতে জীবনে প্রথমবারের মতো কলকাতায় পদার্পণ।

স্টেশন থেকে ল্যান্সডাউন প্লেস এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে যাবে, কিন্তু রাস্তাঘাট কিছু চেনা নেই, মালয়ালম এবং ইংরেজি ব্যতীত কোনও ভাষা জানা নেই, সঙ্গে নগদ টাকাও খুব বেশি নেই। ট্যাক্সি ধরতে হবে, অথচ একজন চালকও নগদ টাকা ছাড়া যেতে রাজি হচ্ছেন না, অনলাইনে ভাড়া নিতে চাইছেন না। ক্লান্ত হয়ে সে কী করবে ভাবছে, এই সময় এগিয়ে আসেন এক চালক। তিনি পৌঁছে দিতে রাজি, ভাড়া ৩০০ টাকা, নগদ না হলেও চলবে।

পথে যেতে যেতে ফোনে চালকের সঙ্গে বন্ধুর যোগাযোগ করিয়ে সঠিক পথনির্দেশ পেয়ে যায় ওই ছাত্র, ফলে মধ্যরাত পেরিয়ে লেক গার্ডেনস স্টেশনের কাছে বরাজ রোডে নামে সে। ফোন বের করে চালককে ৩০০ টাকা দিতে যাবে, আচমকাই তার হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয় চালক, এবং ৩০০-র পরিবর্তে ৩,৫০০ টাইপ করে লেনদেন সম্পূর্ণ করে ফোন ফেরত দিয়ে ট্যাক্সিতে চড়ে উধাও হয়ে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব ছাত্র কোনোক্রমে বন্ধুর বাড়ি পৌঁছে বন্ধু ও তার বাবাকে জানায় সব কথা।

আর তারপরেই তারা দারস্থ হন কলকাতা পুলিশের এবং অভিযোগ করার পরেই সমস্যার সমাধান করেন কলকাতা পুলিশ ।খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত পেয়ে চালকের বিরুদ্ধে অবশ্য আর কোনও অভিযোগ দায়ের করতে চায়নি ওই ছাত্র, সুতরাং ঘটনাপ্রবাহের ইতি এখানেই, তবে থানা থেকে বেরোনোর আগে এত অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধানের জন্য সঞ্জীব এবং কলকাতা পুলিশকে প্রভূত কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি সে, পরে এসএমএস করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন তার বন্ধুর বাবাও।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *