April 19, 2025 | Saturday | 11:35 PM

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে রবীন্দ্রনাথ বাঙালির ঐতিহ্য

0

TODAYS বাংলা: শ্যামল সান্যাল
ঢাকা, বাংলাদেশ
৯ মে ২০২২
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অতুলনীয় প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি অঙ্গনে মেধার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

তিনি একজন মানবতাবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক ও অসাম্প্রদায়িক আধুনিক চেতনার মানুষ হিসেবেও বিশ্বজুড়ে নন্দিত। বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে কবিগুরু নিবিড়ভাবে মিশে আছেন। তিনি আমাদের সামাজিক বৈষম্য দূর করতে প্রেরণা যুগিয়েছেন।

তাই একটি সংস্কৃতিবান্ধব ও সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে রবীন্দ্রনাথ আমাদের সামনে সতত আলোকবর্তীকা হিসেবে দেদীপ্যমান। রোববার সন্ধায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে জাতীয় পর্যায়ে ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। স্মারক বক্তব্য দেন প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালি) আসনের এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জজ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম। স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, কবিগুরুর চেতনা ও দর্শন আমাদের সৃষ্টিকর্মের অফুরন্ত প্রেরণা হিসেবে অগ্রযাত্রার উৎস হয়ে থাকবে অনন্তকাল। রবীন্দ্রচর্চা ও গবেষণা আজ সমগ্র বিশে^ই ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আজকের প্রজন্মকে বেশি বেশি রবীন্দ্রচর্চা করে রবীন্দ্রের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে এদেশকে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে এবং বাঙালি জাতিকে বিশে^র বুকে সুখি-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে পরিচিত করতে হবে।


রবীন্দ্র জয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনার শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশেন করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী প্রফেসর ড. রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা ও তার সুরের ধারা সংগীত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভারত থেকে আগত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী বিশ্বরূপ রুদ্র ও তন্ময় মুখার্জি সংগীত পরিবেশন করেন। কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক মঞ্চায়ন করেন। অনুষ্ঠান চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
পতিসর কাচারিবাড়ি চত্বরে অনুষ্ঠান : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমজার বলেছেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের প্রেরণার উৎস। রবীন্দ্রনাথ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিলেন। এই পতিসর ও নওগাঁকে সমগ্র বিশ্বে পরিচিত করেছেন। পতিসরের জলকাদায় তিনি মিশে আছেন। তিনি ছিলেন সুষ্টিশীল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন। গতকাল রোববার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নওগাঁর আত্রাইয়ের পতিসরে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি চত্বরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রবীন্দ্র জন্মোৎসবের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গৃহিত কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করেছে জেলা প্রশাসন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জমিদারির অংশ দেখাশোনার জন্য আত্রাইয়ের পতিসর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তিনি এলাকার উন্নয়নে কৃষি ব্যাংক, দাতব্য চিকিৎসালয়, শিক্ষাব্যবস্থা ও সমবায় সমিতি গড়ে তুলেছিলন। তিনি মানুষকে মানুষের মতো গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। এজন্য বার বার এই স্মৃতি বিজড়িত পরিসতে আসতে মন চায়।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে দেবেন্দ্র মঞ্চে কবির জীবনী নিয়ে এক আলোচনা সভা হয়। যেখানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নওগাঁ-৩ আসনের এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৬ আসনের এমপি আনোয়ার হোসেন হেলাল, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলম, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া।


আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ রাজশাহী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আশরাফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. পিএম সফিকুল ইসলাম, রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের পরিচালক প্রফেসর ড. আলী রেজা আব্দুল মজিদ এবং নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। আলোচকরা রবীন্দ্রনাথের জীবনী নিয়ে আলোচনা করেন।


শাহজাদপুর কাচারিবাড়ি মিলনায়তনে অনুষ্ঠান : নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনকে অনুসরণ করে নিজেদের জীবনকে গড়ে তোলা উচিত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু কবি নন, একজন মহাপুরুষ। জমিদার বংশে জন্ম নিয়েও তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। গতকাল রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাচারিবাড়ি মিলনায়তনে কবিগুরুর ১৬১তম জন্মবার্ষিকীতে তিন দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিকে বুকে ধারণ করেছিলেন।

এজন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাধারণ মানুষকে ভালোবাসতেন, গান ভালোবাসতেন, কবিতা ভালোবাসতেন। আমরা যদি রবীন্দ্রনাথকে মনেপ্রাণে ধারণ করতে পারতাম তবে আরও উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছাতাম। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থানীয় এমপি প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শামীম খান, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান, পৌর মেয়র তরু লোদী, রবির ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আজম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চয়ন ইসলাম প্রমুখ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *