তেলেঙ্গাবাগান দুর্গাপূজা কমিটির এবারের থিম “তোরমা”
TODAYS বাংলা: দীর্ঘ ৩৬৫ দিনের অপেক্ষার পর মা আসেন আমাদের ঘরে। আমরা প্রাণপণে অপেক্ষা করে থাকি। পুজোর কেনা কাটা শুরু হয়ে যায় দীর্ঘ দিন আগে থেকেই। সাথে শুরু হয় প্যান্ডেল তৈরির কাজ। এবারে তেলেঙ্গাবাগান দুর্গাপূজা কমিটির কি থিম করেছে তা বিষয়ে কথা বলে যা জানালেন-

পুজো কমিটির নাম :- তেলেঙ্গাবাগান
১) আপনাদের দুর্গা পুজো কতদিনের ?
উ:- ৫৭ বছরের
২) এবারের থিম কি?
উ:- তোরমা


৩) প্যান্ডেল তৈরি হওয়ার উদ্যোগ পুজোর কতদিন আগে থেকে নেওয়া হয়?
উ:- ১-২ মাস আগে থেকেই
৪) থিমের ভাবনার কারণ?
উ:-“তোরমা”
তোরমা হল তিব্বতীয় আচারের কেক যা বৌদ্ধ ধর্মের নৈবেদ্য হিসাবে ব্যবহার হয়। তিব্বতে রীতিমতো খাবারের নৈবেদ্য দেওয়া হয়। যেখানে বার্লি নামক শস্য ও ইয়াক মাখন থেকে এই নৈবেদ্য তৈরী হয়। তোরমা সন্ন্যাসী এবং সাধারণ মানুষ উভয়ের দ্বারাই তৈরী হয়। বৌদ্ধের চিত্রের সিলুয়েট বা মেরু পর্বতের আকৃতি অনুকরণ করে পাথরের স্তূপ তৈরীর ঐতিহ্য থেকে এই আকৃতিটি এসেছে। তোরমা গলিত মাখনে আবৃত থাকে। নানা রকম ফুল ও কলকার আকারে সজ্জিত হয়।

তিব্বতে তান্ত্রিক আচার অনুষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে তোরমার রঙ ও আকার, যেমন:- সাদা তোরমা (তারা ও অবলোকিতেশ্বর দেবতা-শান্ত দেবতাদের জন্য)। লাল তোরমা (বস্ত্র যোগিনী ও চক্র সম্ভার দেবতা- ক্রুদ্ধ দেবতাদের জন্য) এছাড়া খাবার তোরমা যা ভোজ অনুশীলনে ব্যবহার করা হয় ও প্রাণীদের জন্য অবশিষ্টাংশ দেওয়া হয়। তোরমা আবার ধর্মরক্ষাকারী, বাঁধাসৃষ্টিকারী এবং অন্যান্য নিম্ন মানুষদের জন্য নিবেদন করা হয় একে বলা হয় গেক্টর।
তোরমা শুধু নৈবেদ্যই নয়, নিঃস্বার্থতা,অস্থিরতা এবং বোধিসত্ত্ব পথের বৌদ্ধ ধারণাকে নির্দেশ করে। তোরমা তৈরীর কাজটি আধ্যাত্মিক মনশুদ্ধিকারী উপকারী বলে মনে করা হয়। তোরমা অর্ঘ্যের মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট ধ্যান, মুদ্রা ও জ্ঞান সংহিতাবদ্ধ আচার অন্তর্ভুক্ত এবং প্রায়শই বুদ্ধ বা বোধিসত্ত্বদের অর্পন করা হয়। তোরমাকে দেবতাদের বাসস্থান হিসেবে গণ্য করা হয়।
এমনই এক বৌদ্ধিক ধর্মীয় উপাচার তোরমা যার আদলে গড়ে উঠবে তেলেঙ্গাবাগানের সমগ্র মন্ডপটি। যেই দেবগৃহে হবে মায়ের অধিষ্ঠান। বিভিন্ন আকারের তোরমা দিয়ে সেজে উঠবে তেলেঙ্গাবাগানের পূজা প্রাঙ্গণ। এই ভাবনার মধ্য দিয়ে একই বার্তা বহন করবে যেন সকলের ঘরে ঘরে মা নৈবেদ্য রূপে বিরাজমান হন এবং সকলের খাদ্য ভান্ডার পরিপূর্ণ থাকে। তাই মায়ের কাছে পার্থনা–
“আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে”
