দেহে জিপিএস ট্র্যাকার লাগিয়ে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হয়েছিল অতি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ
TODAYS বাংলাঃ দেহে জিপিএস ট্র্যাকার লাগিয়ে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হয়েছিল অতি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ। সেই কচ্ছপেরই সন্ধান মিলল ওপার বাংলায়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উদ্যোগে জঙ্গলের নদীতে ছাড়া হয়েছিল ১০টি কচ্ছপ। যার মধ্যে ৭টি স্ত্রী এবং ৩টি পুরুষ কচ্ছপ।
গত শনিবার, তারই একটিকে বাংলাদেশের সুন্দরবন সন্নিহিত জেলা খুলনার দিঘলিয়া থেকে উদ্ধার করেন পশ্চিমবঙ্গ বন দপ্তরের বনকর্মীরা।
পশ্চিমবঙ্গ বন দপ্তর সূত্রে খবর, অতি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’ (রিভার টেরাপিন)-র জীবনচক্রের উপর নজর চালাতেই এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্রথম বার আইইউসিএন-এর রেড বুক
তালিকায় ঠাঁই পাওয়া ওই কচ্ছপগুলির দেহে জিপিএস ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হয়েছিল। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রজননে সক্ষম বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির ১০টি কচ্ছপকে জানুয়ারিতে নদীতে ছাড়া হয়। প্রতিনিয়ত এদের গতিপ্রকৃতি জানার জন্যই কচ্ছপগুলির শরীরে জিপিএস ট্যাকার বসানো হয়েছিল।
সেই কচ্ছপগুলির মধ্যে একটিরই সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশে। ওপার বাংলার এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গাজিরহাট এলাকার এক মত্স্যজীবীর জালে ধরা পড়ে সেই কচ্ছপ। এরপর খবর পেয়ে বাংলাদেশের বনকর্মীরা এসে সেটিকে উদ্ধার করেন। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রজাতির কচ্ছপের সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য সজনেখালিতে একটি পুকুর তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই বেশ কয়েক বছর ধরে কচ্ছপগুলির সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা করেছে ব্যাঘ্র প্রকল্প। প্রথমে ১২টি কচ্ছপকে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে বাচ্চা সহ সেই সংখ্যা আপাতত দাঁড়িয়েছে ৩৭০। দোবাঁকি, খাটোয়াঝুড়ি ও হরিখালিতেও এই প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বনকর্মীরা জানিয়েছেন, এক সময়ে সুন্দরবন থেকে শুরু করে মায়ানমার, তাইল্যান্ড ছাড়িয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপের বসবাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রজাতিটি বিলুপ্তপ্রায়। ফলে বনদপ্তরের তরফে সাধ্যমতো সংরক্ষণের চেষ্টা চলছে।