May 18, 2024 | Saturday | 9:04 PM

এইসময় শিশুদের জ্বর হলে ভয় পাবেন না!

0

TODAYS বাংলাঃ শিশুদের এই জ্বর কোনও নতুন সমস্যা নয়। এত বছর ধরে আমাদের, অর্থাৎ সব শিশু বিশেষজ্ঞদের এরকম জ্বরের মোকাবিলা করতে হয়েছে। যা অনেক সময়ই শিশুদের কোভিডের চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক। তাই শিশুদের কোভিড নিয়ে এতদিন কোনও পেডিয়াট্রিশিয়ানকেই তেমন ভাবতে হয়নি।

ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ক্রাব টাইফাস, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া জাপানিস এনকেফেলাইটিস, অথবা ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে নিউমোনিয়া, রেসপিরেটরি ব্রেথলেসনেস-এর মতো জটিলতা শিশুদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সময় মতো ধরা পড়া ও উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হয়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই সমস্যাগুলোও বাড়ে। বিশেষ করে যেখানে ঘেষাঘেষি বসতি সেই সব জায়গায় সংক্রমণের হারও খুব বেশি হয়। পাঁচ বছরের নিচে শিশুরা সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে যেহেতু বাচ্চারা ঘরের বাইরে তেমন বের হয়নি, তাই কিছুদিন হলেও এই সংক্রমণের হার কিছুটা কম ছিল। কোভিড সংক্রমণ একটু নিয়ন্ত্রণে আসতেই অর্থাৎ জুনের মাঝামাঝি থেকে ফের এই সংক্রমণগুলো মাথা চাড়া দিয়েছে। টানা বর্ষা চলায় যা বর্তমানে সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছে।

কিন্তু অভিভাবকদের কাছে এই মুহূর্তে কোভিডের আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। তাই বাচ্চার জ্বর হলে নিজেরাই কোভিড টেস্ট করিয়ে নিচ্ছেন। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে নিশ্চিন্ত হয়ে যাচ্ছেন। আর এটাই ভয়ের। কারণ এখনও পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোভিডে মৃত্যুর হার নন কোভিড ভাইরাসের তুলনায় অনেক কম। একই সঙ্গে কোভিড আবহে অনেকেই বাচ্চাকে ফ্লু, জাপানি এনসেফেলাইটিসের মতো একাধিক ভ্যাকসিন দেওয়াননি। ফলে এই রোগগুলোর সংক্রমণের একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

কোভিডে বাচ্চাদের থেকে বড়রা সংক্রমিত হন। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের বাড়াবাড়ি না হলেও বড়দের হতে পারে। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রে বাচ্চাদের থেকে বড়রা সংক্রমিত হন না। অথচ বাচ্চাদের রোগ পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়।

প্রথম থেকেই এই উপসর্গের উপর অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখতে হবে। যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ কম বেশি এক রকম হয়। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর বাড়লে খিঁচুনি, গা-হাত-পা ব্যথা। কারও কারও পেটের সমস্যাও হতে পারে। ভাইরাস শরীরের কোথায় হামলা চালাচ্ছে তার উপর সংক্রমণের ধরণ নির্ভর করে। এগুলো কেবল মাত্র কোভিডের উপসর্গ না তাই প্রথম থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি। প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বরের গতি প্রকৃতির উপর নজর রাখতে হবে। ওআরএস দিয়ে শরীরে জলের মাত্রা বজায় রাখা, শ্বাস প্রশ্বাসের হার অত্যধিক বাড়ছে কিনা তাও নজরে রাখতে হবে। তিন-চারদিন প্যারাসিটামল দিয়েও বাচ্চার জ্বর কমার বদলে তীব্রতা বাড়লে, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে, ইউরিন আউটপুট কমে গেলে, বা বাচ্চা নেতিয়ে পড়লে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। প্রত্যেক বাবা-মা’কে মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া না হলে বাচ্চাদের রোগ পরিস্থিতির অবণতি দ্রুত হয়। মৃত্যুও হতে পারে।

এর প্রতিকারের প্রথম শর্তই হল সময় মতো বাচ্চার রুটিন টিকাকরণ করাতে হবে। এক বছর চার মাস বয়সের মধ্যেই প্রধান টিকাগুলি নেওয়া হয়ে যায়। যাঁরা এখনও বয়স অনুযায়ী বাচ্চাকের ভ্যাকসিন দেননি, তাঁদের তা দিয়ে দিতে বলব। এছাড়াও তিন-চার দিনে জ্বর না কমলে কোভিডের পাশাপাশি অন্যান্য সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হতে সব রক্ত পরীক্ষাই করিয়ে নিতে হবে ও রিপোর্ট অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে। অভিভাবকরা সতর্ক থাকলে সময় মতো সঠিক চিকিৎসায় শিশুদের ভাইরাল ফিভার সেরে যায়। অধিকাংশ সময় তা জটিল আকার ধারণ করে না। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে বলব।

Advertise

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *